বিশ্বরুপ ঘোষ
“সকলের জন্য সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে”
বিদ্যালয় জীবনে আমরা সবাই এই বাক্যটার সাথে পরিচিত।পরীক্ষার দৌলতে আত্মস্থ করতে হলেও বাস্তব জীবনে এর প্রয়োগ হয় খুবই কম। কিন্তু হাবড়ার মেয়ে সায়নী পাল বাক্যটিকে বইয়ের পৃষ্ঠা আর পরীক্ষার নম্বরের মাঝখানে স্যান্ডউইচ করে না রেখে প্রয়োগ ঘটালেন নিজের ব্যবহারিক জীবনেও।
ক্যান্সার ‚এটি শুধুমাত্র একটি রোগই নয় রোগীর কাছে একপ্রকার অভিশাপও বটে।ক্যান্সার এ কেমোথেরাপি চলার কারণে চুল বিসর্জন দিতে হয় রোগীকে।ফলত প্রিয় জিনিস হারানোর ফলে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন অনেক রোগীই।তাই এবার সেই ক্যান্সার রোগীদের পাশে এসে দাড়ালেন হাবড়ার তরুণী সায়নী পাল।তিনি জানানলেন “আমার চুল আজ না থাকলে দুদিন পর উঠে যাবে কিন্তু‚এই চুল পাওয়ার পর যদি কারোর মুখে হাসি ফোটে তাহলে তার থেকে ভালো কিছু হতে পারে না।তবে অনেকদিন ধরেই ইচ্ছা ছিল এই কাজটা করার।এখন করতে পেরে বেশ ভালো আপ্লুত মনে হচ্ছে নিজেকে।” পরিবার এর লোক একটু অবাক হলেন মানা করেননি তাদের মেয়েকে। দিদি পূজাও বোনের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে পরবর্তীতে যুক্ত হতে চান এই ধরণের কাজে।এছাড়া আরো যোগ করলেন সকলের উচিৎ রোগীদের পাশে দাঁড়ানোর।যদি তার আহবানে সাড়া দিয়ে একজনও এগিয়ে আসেন তাহলে সেটা অনেক বড় পাওনা তার কাছে।সায়নীর বাবা সমীর বাবুও তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন।মেয়ের কাজে শুধুমাত্র খুশিই তিনি নন গর্বিতও বটে। কথায় কথায় এই একুশ বছরের সায়নী আরও জানালেন পথ শিশু ও পথ কুকুরদের জন্যও কাজ করার ইচ্ছা তার রয়েছে। পায়ের তলার মাটি আপাতত শক্ত নয় বলে লক্ষ্য পূরণের জন্য মগ্ন সরকারি চাকরির প্রস্তুতিতে।
কেমোথেরাপি চলার সময় শরীরে রেডিয়েশানের ফলে চুল উঠে যেতে থাকে।এমন অবস্হায় অনেক রোগী মানসিকভাবে নেগেটিভ হয়ে পড়েন। ক্যান্সার এর খরচ খরচা সামলে সবার পক্ষ্যে উইগের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়ে ওঠে না ।এই পরিস্থিতিতে সায়নীদের মতো যদি সবাই এগিয়ে আসেন তাহলে কিছু রোগী অন্তত নিজের আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবেন এবং স্বাভাবিক জীবনেও ফিরতে পারবেন।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো আগামী দিনে এগিয়ে যাওয়ার…